যুক্ততর্কে রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার আসামিদের রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আবেদন করেছে। অন্যদিকে আসামিদের নির্দোষ দাবি করে বেকসুর খালাস দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাদের পক্ষের আইনজীবীরা।
রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে গত ২১ নভেম্বর। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩২ আসামির পক্ষে আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
বুধবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
সাবেক র্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানা, এএসআই বজলুর রহমান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূরের পক্ষে আইনজীবীরা এদিন যুক্তিতর্ক শেষ করেন। বিচারক পরে রায়ের দিন ঠিক করে দেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ তার পাঁচ সহযোগীকে অপহরণ করা হয়।
একই সময় একই স্থান থেকে অপর একটি গাড়িতে থাকা নারায়ণগঞ্জ আদালতের প্রবীণ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়।
ঘটনার তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দর উপজেলা শান্তির চর এলাকার তীর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এই হত্যাকাণ্ডে নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি এবং চন্দন সরকারের মেয়ের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করেন।
প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে প্রধান আসামি নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মণ্ডল।
এই ঘটনায় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশেনের তৎকালীন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনের পাঁচ সহযোগীসহ মোট ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার ১৭ মাস পর মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তিনিসহ বর্তমানে এই মামলায় ২৩ আসামি কারাগারে রয়েছেন। পলাতক ১২ জনের মধ্যে আটজনই র্যাব সদস্য।
পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, আসামিদের মধ্যে ২১ জন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৬৪ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত; যাদের মধ্যে ৬০ জন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছে।